নওগাঁ প্রতিনিধি : ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রতিটি মানুষই উন্নত জীবন যাপন বা বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে চায়। আবার কিছু কিছু মানুষের স্বপ্ন, আশা আকাঙ্ক্ষা মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই যেন খান খান হয়ে ভেঙ্গে পড়ে। বর্তমান সমাজে এমন চিত্র কম নয়। তারপরেও কিছু কিছু ব্যক্তির বিচিত্র জীবন যাপন লক্ষ্য করা যায়। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার হলুদ বিহার গ্রামের প্রতিবন্ধী তোয়ালী এর জলন্ত উদাহরণ। আব্দুর রশিদ ওরফে তোয়ালী হলুদ বিহার গ্রামের মোঃ নিলচান এর পুত্র। ৮ ভাই বোনের মধ্যে তোয়ালী ছোট। ভোটার আইডি অনুযায়ী তোয়ালীর বয়স ৩০ বছর। তোয়ালী জন্মের পর থেকে স্বাভাবিক নয়। তার দুই পা অচল। তোয়ালী হাতের ওপর ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে চলে। তার কথাবার্তা ও স্বাভাবিক নয়। প্রতিবন্ধি হলেও সে নিজেকে কখনও দুর্বল মনে করে না।
তোয়ালী জানায়, সে প্রায় ৮ বছর পূর্বে হুইল চেয়ার পেয়েছে। হুইল চেয়ারের সহযোগিতায় সে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে পারে। তোয়ালীর ভাইয়েরা সবায় ভিন্ন বাড়ীতে বসবাস করে। সে মা বাবার সংগে খায়, বাবা বৃদ্ধ ও বিছানাগত। প্রতিবন্ধী হলেও তোয়ালী কারো সাহায্য নিয়ে দিনাতিপাত করতে আগ্রহী নয়। অবশেষে হুইল চেয়ারের সহযোগিতায় প্রথমে তোয়ালী বরফের ব্যবসা করে। এরপর সে গ্রামে গ্রামে বাদাম ভাঁজা বিক্রি করে। তারপর সে হাটে হাটে মুরগি কেনাবেচা করে। এক পর্যায়ে পাস্টিক সামগ্রী বেচাকেনা করেছে। এখন তোয়ালী গ্রামে গ্রামে পান সুপারী বেচাকেনা করে। তোয়ালী জানায়, সে প্রতিদিন ২৫-৩০ বিরা পান বেচাকেনা করে। এতে যা লাভ হয় তা দিয়ে সে চলে। তার বাড়ীঘর নেই। পুরনো জরাজীর্ণ ভাংগা মাটির ঘরে থাকে। ঘরের দুয়ারও নেই। তোয়ালীর মা তারা বেগম জানান, তোয়ালী কিছু প্রতিবদ্ধি ভাতা পায় এবং ব্যবসা বাণিজ্য করে চলে। সে গত বছর চকিদারী ট্যাক্সও দিয়েছে। তোয়ালী জানায়, ১০/১২ হাজার টাকা হলে সে ব্যবসা ভালভাবে চালিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু টাকা না থাকায় ব্যবসা চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হয়। তোয়ালী জানায় তার কোন কষ্ট নেই। প্রতিবন্ধী হলেও স্বনির্ভর জীবন যাপন করছে।
এক প্রতিবন্ধী স্বনির্ভর জীবন যাপন
Spread the love
Spread the love