স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত এ মামলায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় দেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই রায় দেন তিনি।
ঐশীর দুই বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান রনিকে এই মামলায় হত্যাকাণ্ডে সহায়তাকারী হিসেবে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে জনি খালাস পেয়েছেন।
মামলার অন্য আসামি ঐশীদের শিশু গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমির বিচার চলছে শিশু আদালতে।
২০১৩ সালের ১৬ অগাস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের মেয়ে ঐশী রহমান রমনা থানায় নিজে আত্মসমর্পণ করেন।
বাবা-মা’কে ঐশীই হত্যা করে বলে পুলিশের অভিযোগপত্রে বলা হয়। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের মাতুব্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
তবে মামলার বাদী মাহফুজের ভাই মশিহুর রহমান মনে করেন, তার ভাতিজি এই হত্যাকাণ্ড ঘটাননি।
ঐশী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও পরে তা অস্বীকার করে বলেন, ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল।
গত ২০ অক্টোবর ও ৪ নভেম্বর পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন উভয়পক্ষের আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান ও আসামিপক্ষে মাহবুব হাসান রানা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এ মামলায় ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে বাদী ঐশীর চাচা মো. মশিউর রহমান রুবেলসহ ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
গত ১৩ অক্টোবর মামলাটির প্রধান আসামি ঐশীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেন আদালত। আত্মপক্ষ সমর্থনকালে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তার বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে দাখিল করেন ঐশী। অন্য দুই আসামি জনি ও রনিও নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।এ ঘটনায় পরদিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ভাই মশিউর রহমান পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। পরে গ্রেফতার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে। গত ৩১ মার্চ আসামি রনির জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।