রুবাইয়াত আম্বিয়া জাহান স্বাতী ,চাটমোহর প্রতিনিধি : বছরে যেখান থেকে কোটি টাকার রাজস্ব আয় সেই পাবনার চাটমোহর উপজেলার রেলবাজার অমৃতকুন্ডা হাটে বেহাল দশার অবসন ঘটছে না।
চলনবিল অঞ্চলের সর্ব বৃহত্ত হাট চাটমোহরের অমৃতকুন্ডা হাট। প্রতি অর্থ বছরে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ্য টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে এই হাটের ডাক হয়ে থাকে। অথচ গত ১০ বছরে এই হাটের উন্নয়ন মূলক কোন কাজ না হওয়ায় কেক্রা-বিক্রেতা ও হাটুরেদের পরতে হয় নাজেহালে।
রোববারে সরেজমিনে হাটে ঘুরে দেখা যায়, হাটে টিউবয়েল না থাকায় রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। টয়লেটের অভাবে হাটুরিরা যেখানে সেখানেই মল-মুত্রর তাগ করায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে চরমে। মান্ধাতার আমলে ইটের কারপ্টে ও ডেন নির্মাণ করা হলেও দীর্ঘ দিন আগ থেকেই ইটগুলো উটে উটে যাওয়ায় সেগুলো চুরি হয়ে যাচ্ছে। ডেনগুলো ভেঙ্গে পড়ায় একটু বৃষ্টিতেই হাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে হাটুরীদের পরতে হয় সিমাহীন দূর্ভোগে। বৃষ্টির পানিতে তলীয়ে যায় হাটে আগত শাক-সবজি, তরিতরকারী, ফসলাদী, মালপত্র। ভাঙ্গা ডেনে ও ছোট-বড় গর্তে পানি জোমে থাকায় পা পিছলে পড়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরণের দূর্ঘটনার শিকার হয় হাটুরেরা। হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও ব্যবহারের অনুপযোগি হওয়ায় তাতে ব্যাপারীরা কেনা-বেচার কাজ করতে পারছেনা। হাটের ভিতর বার মাস পানি জুমে থাকায় পাবনা-চাটমোহর সড়কের উপরে পাট হাটসহ বিভিন্ন পন্নর পরসা সাজিয়ে বেচা-বিক্রয় করায় রোববারের হাটবারে সড়কটিতে ব্যপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরতে হয় অসহায়হীন ভোগান্তিতে। এমনকি এ্যামবুলেন্সে থাকা রোগিও যন্তনায় ছটফট করতে থাকে। এই হাটে দিন দিন বেহাল দশা বেড়েই চলেছে। অথচ কিনাল ও বেচালে নেওয়া হয় অতিরিক্ত খাজনা বলেও অভিযোগ করেন হাটে আগতরা।
কৃষক রনি হোনেস জানান, হাটের যা অবস্থা আর বলবেন না। দেখতেই পরছেন কত পানি। আমার ক্ষেতের কিছু বেগুন, ঝিংঙ্গা, কুমড়া বিক্রয়ের জন্য আনছিলাম বৃষ্টির পানিতে বেশ কিছু বেগুন আর ঝিংঙ্গা ভেসে গেছে।
এ্যাডওয়াড কলেজের ছাত্র আছিফুর রহমান বলে, দেখন সেই ৮টা থেকে কলেজ ব্যাসে খ্যারাইয়া আছি। সড়েকের উপর পাট হাটা লাগানোর কারণে কিযে যানযতের সৃষ্টি হয়। রোববার এলেই এই হাটের জন্য এক থেকে দেড় ঘন্টা দেড়ি হয় কলেজে যেতে।
পাট ব্যপারী কদরুল মল্লিক জানান, হাটের জায়গা থাকলেও সেখানে পানি থাকায় পাবনা-চাটমোহর সড়কের পাশেই পাট ক্রয় করতে হয় প্রতি বছর।
কাপড় ব্যবসীক ওলিউল্লাহ বলেন, দেখন ডেনগুলো ভেঙ্গে পড়ায় বৃষ্টির পানি বেড় হতে না পারায় আমার কাপড়ের দোকানে পানি উঠেছে।
হাট মালিক (ইজাদ্দার) আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল কুদ্দুস সরকার জানান, সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে এবার ৮০ লাখ টাকা দিয়ে অমৃতকুন্ডা হাট ডেকে নিয়েছি। তবে বছর ভরাই বৃষ্টি আর ডেনেজ, কারপেটিং অবস্থা খুই খারাপ। অনেক স্থানে মাটিও নেই, ছোট-বড় গর্ত। পানি বেড় হওয়ার তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের মাথায় হাত।
আরেক ইজাদ্দার মহরম মল্লিক বলেন, হাট মালিকদের মাথায় এবার বাজ পড়েছে, হাট বার প্রতি রোববারেই এবার বৃষ্টি। প্রায় কোটি টাকা দিয়ে হাট নিয়ে এবার লোকসানে পরতে হবে। হাটের ওইসব দূর্ভোগগুলো সমাধান না হলে আগামী বছরগুলোতে অমৃতকুন্ডা হাট থেকে সরকারের কোষাগারে রাজস্ব আয় কমে যাবে বলেও তিনি মনে করেন।
হাটের সভাপতি মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ গিয়াস উদ্দিস জানান, হাটের টয়লেট, ডেনগুলো মেরামত এবং মাটি ফেলানোর জন্য উপজেলা প্রকৌশলী দিয়ে মেপে ইস্টিমেট রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাজেট এলে খুব শিগরোই কাজ শুরু করা হবে।
চাটমোহর অমৃতকুন্ডা হাটে বেহাল দশা
Spread the love
Spread the love