তারিক আবেদীন ,দিনাজপুর : দিনাজপুরে প্রায় অর্ধেক দামেও পর্যাপ্ত চামাড়া সংগ্রহ করতে পারেনি ব্যবসাীরা। জানা গেছে, বাজারে চামড়া সরবরাহ কম থাকার কারনেই ব্যবসায়ীরা কাংখিত চামড়া কিনতে পারেনি। আর বাজারে চামড়ার কম সবরাহের কারন হিসেবে সরকার ঘোষিত দামকেই দায়ী করছেন তারা। দেশীয় বাজার মুল্য কম থাকায় বাজারে না আসা বিপুল পরিমান চামড়া ভারতে পাচার হয়ে যাবে-এমন আশংকা সীমান্তবেষ্টিত এই জেলার ব্যবসায়ীদের। দেশের উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার দিনাজপুরের রামনগরের ২ শতাধিক ব্যবসায়ী গত বছর কোরবানীতে গরুর চামড়া কিনেছিলো প্রায় ৪০ হাজার, আর ২৫ হাজার কিনে ছাগলের চামড়া। কিন্তু প্রতিবছর কোরবানীর পশুর সংখ্যা বাড়লেও এবার চামড়া কেনার চিত্র উল্টো। এবারের কোরবানীতে এই বাজারের ব্যবসায়ীরা গরুর চামড়া কিনতে পেরেছে মাত্র ১৭ হাজারের মতো আর ছাগলের চামড়া কিনেছে প্রায় ২০ হাজার। ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ কম থাকায় তারা চাহিদা অনুযায়ী চামড়া কিনতে পারেনি। গত ১০ বছরেও এত কম সরবরাহ দেখেন নি বলে জানালেন তারা। চামড়া ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম জানান, সরবরাহ কম থাকার কারনে বাধ্য হয়েই বেশী দামেই চামড়া কিনতে হয়েছে তাদেরকে। ট্যানারী মালিকরা ক্রয়কৃত চামড়ার দাম না বাড়ালে আর্থিকভাবে লোকসান গুনতে হবে তাদেরকে। ব্যবসায়ী তাজেদুর রহমান জানান, সরকার এবার চামড়ার দাম কম নির্ধারন করায় বাজারে সরবরাহ কমেছে। আর এ জন্য কাংখিত চামড়া পায়নি তারা। বাজারে না আসা চামড়া ভারতে পাচারের আশংকা করেন তিনি। এদিকে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কম থাকায় মূল্য বেশির কথা বললেও বাজারে চামড়া নিয়ে আসা বিক্রেতারা জানালেন উল্টো কথা। ব্যবসায়ীরা দাম না বলায় গতবছরের তুলনায় কমদামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। তারা বলেন, কোরবানীর আগে হঠাৎ করে চামড়ার কম মূল্য ঘোষণা করা হয়। আর যার ফলে বাজারে কম দামে চামড়া ক্রয় করছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। এটি গরীবদের হক মারা হচ্ছে বলে তাদের মত। আর গ্রামাঞ্চলে যারা বেশি মূল্যে চামড়া ক্রয় করেছেন সেইসব মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি তৈয়ব উদ্দীন চৌধুরী জানান, এবারের কোরবানীতে মাত্র ৪০ শতাংশ চামড়া কিনতে পেরেছে দিনাজপুরের প্রায় ২ শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ী। বাকী চামড়া কোথায় গেলো এমন প্রশ্ন এই ব্যবসায়ী নেতার। তিনি বলেন, ট্যানারী মালিকরা কোরবানীর মাত্র ২ দিন আগে গত বছরের বকেয়ার ৭০ শতাংশ পরিশোধ করেছে। কিন্তু টাকা পেলেও চামড়ার সরবরাহ নেই। হঠাৎ করে চামড়ার কম মূল্য ঘোষণা করায় অনেকেই বিভিন্ন এলাকায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করছেন। এসব চামড়া যাতে করে কোনক্রমেই পাচার না হয় সেই দাবি তার। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার একটি বিশাল অংশ আসে চামড়া খাত থেকে। আর প্রতিবছর সিংহভাগ চামড়া সংগৃহীত হয় কোরবানীতে। তাই কোরবানীর পর এই চামড়া যাতে পাচার না হয়ে যায়, সে ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় পদপে নেবে- এমন প্রত্যাশা করেছেন এই অঞ্চলের চামড়া ব্যবসায়ীরা।
দিনাজপুরে অর্ধেক দামে চামড়া
Spread the love
Spread the love