কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে পটল, ঢেঁড়স, করলাসহ বিভিন্ন প্রকারের গ্রীষ্মকালীন সবজীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদীতীরবর্তী ও চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫শ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় উঠতি ফসল বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী ও চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টায় ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৫ মিলিমিটার, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৫ মিলিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে সদর উপজেলার পাঁচগাছি ও যাত্রাপুর, রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা এবং চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৫শ হেক্টর জমির পটল, ঢেঁড়স, করলাসহ গ্রীষ্মকালীন সবজী ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৩শ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত। মৌসুম শেষ না হতেই এসব সবজী ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। বৃষ্টি ও নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এর প্রভাব কাচা বাজারে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সদর উপজেলার পাচগাছী ইউনিয়নের কৃষক আমজাদ জানান, দেড় একর জমিতে পটল চাষ করেছে। হঠাৎ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তার পটল ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পটল বেচে সংসার চলতো এখন আর কোন উপায় নাই।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের কৃষক মজিবর রহমান জানান, বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষে পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভ তো দুরের কথা আসলটাই ঘরে তুলতে পারলাম না। লাল সাক, পুইশাকতো গেছে, পটল ক্ষেত একবার পানি উঠলে সে ক্ষেত আর টেকে না। এখন কি হবে আল্লাহ জানেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার নিচু জমির কিছু সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। লতানো জাতীয় সবজি ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়লে সে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পানি নামার পর স্বপ্লকালীন সবজি চাষের পরামর্শ দিবো।
নদীর পানি বৃদ্ধি, কুড়িগ্রামে সবজির ব্যাপক ক্ষতি
Spread the love
Spread the love