মোঃ তোফায়েল ইসলাম,ঠাকুরগাঁও: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত নারী কবিতার পংক্তির এ শাশ্বত কথাটি আমরা মুখে সমর্থন করি বটে কিন্তু অন্তরে তা ধারণ করি কি-না তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায় কবির ভাষায় , এ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। বিভিন্ন কাজে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করি, তাতে নারী-পুরুষের সমঅধিকারের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় না। গোটা দেশের মতো ঠাকুরগাঁও জেলাতেও নারী শ্রমিকরা তাদের মজুরি প্র্রাপ্তির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। জেলার হঠাৎপাড়া মহল্লার নির্মাণ শ্রমিক ভারতী রানী (৩১), শ্যামলী রায় (২৬), বিলকিস আরা (২৪), জয়ন্তী বালা (৪৫) তারা বলেন, আমরাও পুরুষের মতোই শ্রম দিচ্ছি। অথচ আমাদের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, যেখানে পুরুষদের দৈনিক মজুরি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এটা ঠিক নয়। এ ভাবে বৈষম্য করে আমাদের তথা নারী শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। আরেক শ্রমিক মর্জিনা বেগম বলেন, আমরা কোনো অংশেই পুরুষের চেয়ে কম শ্রম দেই না। কিন্তু বাস্তবে যাদের কাজ করছি, সেই মালিকরা শ্রমের মূল্য পরিশোধের সময় টাকা দিচ্ছেন পুরুষের তুলনায় অনেক কম যা অমানবিক। একই ধরনের কথা শোনা গেছে
জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার নারী শ্রমিকদের কাছ থেকে। তবে ঠিকাদারদের অভিযোগ, নারী শ্রমিকরা কাজ করলেও পুরুষের তুলনায় সময় দেন কম। এ ছাড়াও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বাড়ি গিয়ে সময় অপচয় করেন। যার কারণে পুরুষের সমান টাকা পান না। প্রশ্ন , কেন নারীরা মজুরি কম পাবেন? নারী-পুরুষ উভয়ে মিলে যখন আমরা দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি সে মুহূর্তে নারী শ্রমিকদের প্রতি এমন বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না। নারী শ্রমিকদেরও সমান মজুরি দেয়ার. দরকার । এ জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনও করা হবে। জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোর্শেদ আলী খান জানান, নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। নারী শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে সোচ্চার হতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। ঠাকুরগাঁও জেলা যুব মহিলা আ.লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা আক্তার মোল্লা মনে করেন, বিভিন ক্ষেত্রে নারীদের পিছিয়ে রাখার যে চেষ্টা করা হচ্ছে তার প্রমাণ তাদের নিম্ন মজুরি নির্ধারণ।
নারী শ্রমিকরা মজুরি প্রপ্তির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন
Spread the love
Spread the love