জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কয়েক দিনের টানা বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে এ পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ২ হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা ফলে বাড়ি থেকে বেড় হতে পারছেন না মানুষ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,উপজেলা সদর হাসাপাতাল,বিভিন্ন হাট-বাজার ও নিন্মা অঞ্চল গুলোর বসত বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া হাট-বাজারের দোকানের মালামাল অনত্র সরিয়ে নিচ্ছে ও স্কুল গুলোতে ছাত্ররা আসতে না পারায় ক্লাস বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ২৩টি হাওর যাদু,কাটানদী ও অন্যান্য নদ-নদী গুলোতে বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানির প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সপ্তাহ খানেকের ভারি বর্ষনে সীমান্তের ছোট-বড় ২০ছড়া দিয়ে প্রবল বেগে পাহাড়ী ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারনে পাহাড় ধসের আতংকের মধ্যে রয়েছে চারাগাঁও,চানঁপুর,রজনী লাইন,বড়ছড়া,বাগলী সীমান্তে বসবাস কারী মানুষ। এদিকে যাদুকাটা নদী দিয়ে পাহাড়ী ঢলের পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী বসত বাড়ি গুলো রক্ষা করার জন্য ঐ এলাকার লোকজন করছে পানির সাথে যুদ্ধ। অব্যাহত ভারি বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলের কারনে বন্যা দেখা দিয়েছে উপজেলার-পাতারগাঁও,ইছুবপুর,টেন্ডারপাড়া,সোহালা,সত্রিশ,ইসলামপুর,লামাগাঁও,লামাগাঁও,শ্রীপুর,পাটাবুকা,মানিকখিল,রতনশ্রী,ননাই,আমবাড়ি,জামলাবাজ,সীমানা,সোহালা সহ ৫০ গ্রামের মানুষের বসতবাড়ির চারপাশে পানি বন্ধী হয়ে আছে ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বালিজুরী ইউনিয়নরে মাহতাবপুর,দক্ষিনকুল,বরখলা,বালিজুরী,পাতারী,তিওরজালাল,বাদাঘাট ইউনিযনের ছড়ারপার,লামাশ্রম,ইসলামপুর,তাহিরপুর ইউনিয়নরে লক্ষীপুর,গাজীপুর,চিসকা সহ ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালিজুরী ইউনিয়নরে বালিজুরী এলাহীবক্স উচ্চ বিদ্যালয়,দক্ষিনকুল উচ্চ বিদ্যালয়,বড়দল উচ্চ বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে যার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসতে না পারা ক্লাস বন্ধ রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মৎস্য চাষের পুকুর ও অনেক ফসলী জমি। নদীর তীর সংলগ্ন বীজতলা,আবাদি জমি গুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী বোরহান উদ্দিন,রফিকুল ইসলাম,খেলু মিয়া,আলীনুর মিয়া,সাদেক মিয়া,বট্টু সহ এলাকাবাসী জানান-এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে ছোট-বড় পুকুর,খাল-বিলে পানি উপচে পড়ায় মাছ ও মাছের পোনা ভেসে গেছে। গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিচ্ছে। ব্যবসায় মারাতœক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার বাদাঘাট বাজার ঔষধ কোম্পানীর ফারিয়ার সভাপতি সুহেল আহমদ সাজু জানান-জেলা শহর সহ আশেপাশের উপজেলা গুলোর সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যে ভাবে বাড়ছে বৃষ্টি,সেই সাথে বাড়ছে পানি তাতে করে সীমাহীন ভোগান্তির শেষ থাকবে না অসহায় এ উপজেলা বাসীর। শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান ও অমর চন্দ্র তালুকদার জানান-বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানি বাড়ায় স্কুলে পানি প্রবেশ করেছে তাই ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক জানান-বন্যার পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে পানি প্রবেশ করেছে তাই ক্লাস বন্ধ রয়েছে। বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী ও সাবেক বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম হাজী জয়নাল আবেদিনের ছেলে নিজাম উদ্দিন জানান-বন্যার পানিতে উপজেলার অনেক এলাকার বসত-বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। পাহাড়ী ঢলে যাদুকাটা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আর যাদুকাটা নদীর পানির স্্েরাতের কারনে সোহালা-ফাজিলপুরের রাস্তা ও নদীর পাড়ে বসত বাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক প্রতি বছর বন্যার ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে এর থেকে রক্ষা পেতে হলে এবং তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ককে ঠিকিয়ে রাখতে হলে বাদাঘাট-সোহালা সড়কের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জয়নাল আবেদিন এতিমখানা সংলগ্ন স্থানে বন্যার পানির প্রবল চাপের সৃষ্টি হয়। সেখানে একটি বেড়িবাধঁ স্থাপন করা হলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে রাস্তা ও টিকবে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান-বন্যার কারনে তাহিরপুর উপজেলার হাওর এলাকার দ্বীপ সাদৃশ্য গ্রাম গুলোতে বসবাসকারী মানুষ রয়েছেন উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা মধ্যে। যে পরিস্থিতি হউক মোকাবেলা করার সর্বাতœক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সুনামগঞ্জের বন্যার পরিস্থিতির অবনতি স্কুল,হাসপাতালে পানি,ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ
Spread the love
Spread the love